ওঠ রে চাষি জগদ্বাসী ধর কষে লাঙল।
আমরা
মরতে আছি – ভালো করেই মরব এবার চল।।
মোদের
উঠান-ভরা শস্য ছিল হাস্য-ভরা দেশ
ওই
বৈশ্য দেশের দস্যু এসে লাঞ্ছনার নাই শেষ,
ও ভাই
লক্ষ হাতে টানছে তারা লক্ষ্মী মায়ের কেশ,
আজ
মা-র কাঁদনে লোনা হল সাত সাগরের জল।।
ও ভাই
আমরা ছিলাম পরম সুখী, ছিলাম দেশের প্রাণ
তখন
গলায় গলায় গান ছিল ভাই, গোলায় গোলায় ধান,
আজ
কোথায় বা সে গান গেল ভাই কোথায় সে কৃষাণ?
ও ভাই
মোদের রক্ত জল হয়ে আজ ভরতেছে বোতল।
আজ
চারদিক হতে ধনিক বণিক শোষণকারীর জাত
ও ভাই
জোঁকের মতন শুষছে রক্ত, কাড়ছে থালার ভাত,
মোর
বুকের কাছে মরছে খোকা, নাইকো আমার হাত।
আর
সতী মেয়ের বসন কেড়ে খেলছে খেলা খল।।
ও ভাই
আমরা মাটির খাঁটি ছেলে দূর্বাদল-শ্যাম,
আর
মোদের রূপেই ছড়িয়ে আছেন রাবণ-অরি রাম,
ওই
হালের ফলায় শস্য ওঠে, সীতা তাঁরই নাম,
আজ
হরছে রাবণ সেই সীতারে – সেই মাঠের ফসল।।
ও ভাই
আমরা শহিদ, মাঠের মক্কায় কোরবানি দিই জান।
আর
সেই খুনে যে ফলছে ফসল, হরছে তা শয়তান।
আমরা
যাই কোথা ভাই, ঘরে আগুন বাইরে যে তুফান!
আজ
চারিদিক হতে ঘিরে মারে এজিদএজিদ : উমাইয়ার শাসনকর্তা। তাঁর ষড়যন্ত্রে ইমাম হাসানকে মদিনায় এবং ইমাম হোসেনকে কারবালা প্রান্তরে সপরিবারে হত্যা করা হয়। রাজার দল।।
আজ
জাগ রে কৃষাণ, সব তো গেছে, কীসের বা আর ভয়,
এই
ক্ষুধার জোরেই করব এবার সুধার জগৎ জয়।
ওই
বিশ্বজয়ী দস্যুরাজার হয়-কে করব নয়,
ওরে
দেখবে এবার সভ্যজগৎ চাষার কত বল।।
হুগলি
অগ্রহায়ণ, ১৩৩২
No comments:
Write comments