Search This Blog

Theme images by MichaelJay. Powered by Blogger.

Blog Archive

Monday, November 28, 2016

শোধ করো ঋণ

শোধ করো ঋণ


আগুন জ্বলে না মাসে কতদিন হায় ক্ষুধিতের ঘরে,


ক্ষুধার আগুনে জ্বলে কত প্রাণ তিলে তিলে যায় মরে।


বোঝে না ধনিক, হোক সে হিন্দু হোক সে মুসলমান,


আল্লা যাদের নিয়ামত দেন, পাষাণ তাদের প্রাণ!


  


কত ক্ষুধাতুর শিশুর রসনা খুদকণা নাহি পায়,


মা-র বুক ছেড়ে গোরস্তানের মাটিতে গিয়া ঘুমায়।


যত দৌলত হাশমতওয়ালাহাশমতওয়ালা : জাঁকজমকের অধিকারী। হেরে তাহা পাশে থেকে,


আতর মাখিয়া পাথরের দল যেন ছায়াছবি দেখে!


  


ভেবেছে এমনই নিজে খেয়ে দেয়ে হইয়া খোদার খাসি


দিন কেটে যাবে! এ সুখের দিন কভু হবে নাকো বাসি।


জগতের লোভী মরিতেছে আজ আল্লার অভিশাপে,


তবুও লোভের কাঁথা জড়াইয়া লোভী সব নিশি যাপে!


  


একটা খাসিরে ধরিয়া যখন জবাই করে কশাই,


আর একটা খাসি তখনও দিব্যি পাতা খায়, ভয় নাই।


ভেবেছ ওদেশে হতেছে শাস্তি, তোমাদের হইবে না,


তাই শোধ করিলে না আজও সেই পরম দানীর দেনা।


  


আর ক-টা দিন বেঁচে থাকো, যাঁর ঋণ করিয়াছ, তিনি


তোমাদের প্রাণ দৌলত নিয়ে খেলবেন ছিনিমিনি।


কী ভীষণ মার খাইবে সেদিন, বোঝ না অন্ধ জীব,


তোমাদের হাড়ে ভেলকি খেলিবে সেদিন এই গরিব।


  


বেতন চাহিলে শুনিতে পায় না, মনিবের রাগ হয়,


‘তিনদিন হাঁড়ি চড়েনিকো’ শুনে ভাবে একী কথা কয়!


ঘরের পার্শ্বে লেগেছে আগুন, বোঝে না স্বার্থপর,


আর দেরি নাই, পুড়িয়া যাইবে তাহারও সোনার ঘর।


  


বঞ্চিত রেখে দরিদ্রে, যারা করিয়াছে সঞ্চয়,


দেখিবে এবার, তার সঞ্চয় তার অধিকারে নয়।


অর্থের ফাঁদ পেতে দস্যুরে ডাকিয়া আনিছে যারা


তাহারাই আগে মরিবে, ভীষণ শাস্তি পাইবে তারা।


উপবাস যার দিনের সাধনা, নিশীথে শয়নসাথি,


যাহারা বাহিরে গাছতলে থাকে, ঘরে জ্বলে নাকো বাতি,


তাদের ধৈর্য সহিষ্ণুতা কি পাবে না পুরস্কার?


তারা তিলে তিলে মরে আনিয়াছে এবার খোদার মার!


  


তাদেরই করুণ মৃত্যু এনেছে ভয়াল মৃত্যু ডাকি,


তাদের আত্মা শান্তি পাইবে ভোগীর রক্ত মাখি।


মানুষের মার নয় এ রে দাদা, এ যে আল্লার মার,


এর ক্ষমা নাই, এ নয় ধরার ভাঁড়ামি রাজবিচার।


  


উৎপীড়ক আর ভোগীদের আসিয়াছে রোজ-কিয়ামতরোজ-কিয়ামত : প্রলয়ের দিন।


ধূলি-রেণু হয়ে উড়ে যাবে সব ইহাদের নিয়ামতনিয়ামত : ধনসম্পদ।


এদেরই হাতের অস্ত্র কাটিবে এদেরই স্কন্ধ, শির,


ইহারা মরিলে দুনিয়া হইবে স্নিগ্ধ, শান্ত, স্থির।


  


বাক্সের পানে চেয়ে চেয়ে চোখ ফ্যাকাশে হয়েছে বুঝি!


বাক্স ও চাবি নেবে না উহারা, কেড়ে নেবে শুধু পুঁজি।


খাবি খায় তবু চাবি ছাড়ে নাকো! উৎকট প্রলোভন


মরে না কিছুতে, আত্মঘাতী তা না হয় যতক্ষণ!


  


আমরা গরিব, শুকায়ে হয়েছি চামড়ার আমচুর,


খামচে ধরেছে মাংসওয়ালারে ক্ষুধিত বুনো কুকুর।


কোন বন থেকে কে জানে এসেছে নেকড়ে বাঘের দল,


আমাদের ভয় নাই, আমাদের নাইকো গোরু-ছাগল।


  


সামলাও মাল মালওয়ালা, দেখো পয়মাল হবে সব,


ঊর্ধ্বে নিত্য শুনিতেছ নাকি শকুনের কলরব?


ধূমকেতু নয়, কোন মেথরানি হাতে মুড়ো ঝ্যাঁটা লয়ে


এসেছে আকাশে; পৃথিবী উঠেছে ভীষণ নোংরা হয়ে!


  


নোংরা, লোভী ও ভোগী রহিবে না শুদ্ধ এ পৃথিবীতে,


এ আবর্জনা পুড়ে ছাই হবে নরকের চুল্লিতে।


আসিছে ফিরিয়া এই বাংলায় কাঙালের শুভদিন,


আজিও সময় আছে ধনী, শোধ করো তাহাদের ঋণ!

No comments:
Write comments

Interested for our works and services?
Get more of our update !