Search This Blog

Theme images by MichaelJay. Powered by Blogger.

Blog Archive

Sunday, November 27, 2016

নও কাবা

নও কাবা


  হিয়ায় মিলিল হিয়া,


নদীস্রোত হল খরতর আরও পেয়ে উপনদী-প্রিয়া।


স্রোতোবেগে আর রুধিতে পারে না, ছুটে অসীমের পানে,


ভরে দুই কূল অসীম-পিয়াসি কুলু কুলু কুলু গানে।


কোথা সে সাগর কত দূর পথ, কোন দিকে হবে যেতে,


জানে না কিছুই, তবু ছুটে যায় অজানার দিশা পেতে।


কত মরু-পথ গিরি-পর্বত মাঝে কত দরি বন,


বাধা নিষেধের সব ব্যবধান লঙ্ঘিয়া অনুখন


তবু ছুটে চলে, শুনিয়াছে সে যে দূর সিন্ধুর ডাক,


রক্তে তাহারই প্রতিধ্বনি সে আজও শোনে নির্বাক।


সকল ভাবনা হয়ে গেছে দূর, অনন্ত অবকাশ


ধ্যানের অমৃতে উঠিছে ভরিয়া। দিবস বরষ মাস


কোথা দিয়া যায়, উদ্দেশ নাই! শুধু অনন্ত-পুর


শুনিতেছে দূর আহ্বান-বাণী অনাগত বন্ধুর।


পথে যেতে যেতে চমকিয়া চায়, কে যেন পথের পাশে


ডাকনাম ধরে ডেকে গেল তারে, হাতছানি দিয়া হাসে।


তারই সন্ধানে ঊষর মরুর ধূসর বুকে সে ফেরে,


সে বুঝি লুকায়ে গিরি-গহ্বরে ওই দূর একটেরে!


কোথাও না পেয়ে তরুণ ধেয়ানী হারায় ধেয়ান-লোকে,


এ কী এ বেদনা-আর্ত মুরতি ফোটে গো সহসা চোখে।


যে দোস্ত লাগি ফেরে সে বিবাগি, খোঁজে সে যে সুন্দরে,


সে কোথাও নাই, বিরাট বেদনা দাঁড়ায়ে বিশ্ব পরে।


অনন্ত দুখ-শোক-তাপ ব্যথা, অসীম অশ্রুজল –


অকূল সে জলে একাকী সে দোলে বেদনা-নীলোৎপল।


বিপুল দুখের অক্ষয় বট দাঁড়ায়ে বিশ্ব ছেয়ে,


বেদনা ব্যথার কোটি কোটি ঝুরি নেমেছে অঙ্গ বেয়ে।


শুধু ক্রন্দন, ক্রন্দন শুধু একটানা অবিরাম


রণিয়া উঠিছে ব্যাপিয়া বিশ্ব, নিখিল বেদনাধাম।


  


পড়ে যায় মাঝে কালো যবনিকা, সহসা আঁখির আগে


অসুন্দরের কুৎসিত লীলা ব্যভিচার শত জাগে।


উদ্যত-ফণা কুটিল হিংসা দ্বেষ হানাহানি শত


শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষেরে দংশি মারিতেছে অবিরত।


পাপে অসূয়ায় পঙ্কিল ফাঁকে ডুবে আছে চরাচর,


দিশারি তাদের শয়তান, তার অনুচর নারী নর।


দেখিতে পারে না এ-দৃশ্য আর, নিমিষে টুটে সে ধ্যান,


দুঃখ-পাপের লোকালয়ে পানে ছুটে আসে ব্যথা-ম্লান।


  


হেরে প্রান্তরে কুটিরের দ্বারে কাঁদে অনাথিনি একা,


কাল তার স্বামী গিয়াছে চলিয়া, জীবনে হবে না দেখা!


অদূরে পুত্র-শোকাতুরা মাতা পুত্রের নাম ধরি


ডাকে আর কাঁদে – বঞ্চিত স্নেহ আঁখিজল পড়ে ঝরি।


পথে যেতে যেতে খঞ্জ অন্ধ ভিখারিরা অসহায়


ক্ষুধার তাড়নে পড়ে মুমূর্ষু, ভরে মন করুণায়।


পিতৃমাতৃহীন শিশুদল চায় পথিকের পানে,


তাহারা তাদের পিতা ও মাতার সন্ধান বুঝি জানে।


তরুণ তাপস চলিতে পারে না, বেদনার উচ্ছ্বাস


ফুলে ফুলে ওঠে অন্তর-কূলে, বন্ধ হয় বা শ্বাস!


ঊর্ধ্বে আলোর অনন্ত-লীলা, নিম্নে ধরণি পরে


এমন করিয়া দুঃখ-গ্লানির কেন গো বরষা ঝরে।


ক্লান্ত চরণে চলিতে চলিতে হেরে পথে ধনী যুবা


নগ্ন মাতাল টলে আর চলে, পাশে তার দিলরুবা


দিলরুবা নয় – প্রতিবেশিনী ও কুমারী চেনা সে মেয়ে,


অর্থের বিনিময়ে ও মাতাল এনেছে তাহারে চেয়ে!


সহসা হেরিল –বর্বর এক পিতা তার ক্রোড়ে লয়ে


চলিছে সদ্যোজাত কন্যারে বধিতে সমাজ-ভয়ে!


কন্যা হওয়া যে ‘লাত মানাতের’লাত মানাত : ইসলাম-পূর্ব যুগে আরবের বনি সফিকের পূজ্য দুই দেবী। অভিশাপ, তাই তারে


বধিতে চলেছে – অভাগি জননী কাঁদিছে পথের ধারে।


হেরিল অদূরে ভীম হানাহানি পশুতে পশুতে রণ


নারী লয়ে এক – বিজয়ীরে বীর বলিছে সর্বজন!


চলিতে চলিতে হেরে দূরে এক বাজার বসেছে ভারী,


ছাগ উট সাথে বিক্রয় লাগি বসে অপরূপা নারী।


মালিক তাহার হাঁকিতেছে দাম, বলির পশুর সম


শত বন্ধন-জর্জর নারী কাঁপে মূক অক্ষম।


তাহারই পার্শ্বে পশু-ধনী এক তাহার গোলামে ধরি


হানিছে চাবুক –কুক্কুরে বুঝি মারে না তেমন করি!


সহসা শুনিল অনাহত বাণী ঊর্ধ্বে গগন-পারে –


‘হে ত্রাণ-কর্তা, জাগো জাগো, দূর করো এই বেদনারে!’


চমকিয়া ওঠে নবির চিত্ত, শিহরন জাগে প্রাণে,


মনে লাগে যেন ইহাদের সে-ই মুক্তির দিশা জানে।


  


স্বপ্ন-আতুর যুবক ধেয়ানী আনমনে পথ চলে,


চলিতে চলিতে কখন সন্ধ্যা ঘনায় আকাশতলে।


ধরার ঊর্ধ্বে অসীম গগন, কোটি কোটি গ্রহ-তারা


সে গগন ভরি ঢালে আনন্দে নিশিদিন জ্যোতিধারা।


তাহাদের মাঝে নাহি তো বিরোধ, প্রেমের আকর্ষণে


ভালোবেসে নিজ নিজ পথে চলে, মাতে না প্রলয়-রণে।


এই আলো – এই আনন্দ – এই সহজ সরল পথ


এই প্রেম, এই কল্যাণ তাজি – রচে এরা পর্বত


শত ব্যবধান–নদীপ্রান্তর ঘরে ঘরে মনে মনে,


অকল্যাণের ভূত শয়তান পূজা করে জনে জনে!


তপঃপ্রভাবে সাধনার জোরে অসুন্দর এ ধরা


করিতে হইবে সুন্দরতম, রবে না এ শোক জরা।


রবে না হেথায় পাপের এ ক্লেদ, এ গ্লানি মুছিতে হবে,


পতিতা পৃথ্বী পাবে ঠাঁই পুন আলোর মহোৎসবে।


আঁধার ইহার কক্ষে আবার জ্বলিবে শুভ্র আলো,


হে মানব, জাগো ! মেঘময় পথে বজ্র-মশাল জ্বালো।


আছে পথ, আছে দুঃখের শেষ, আমি শুনেছি সে বাণী,


বিশ্ব-সুষমা-সভায় এ-ধরা হাসিবে অতীত-গ্লানি!


দেখেছি বেদনা-সুন্দরে আমি তোমাদের ম্লান মুখে,


ঘুচিবে-বিষাদ – আসিবে শান্তি প্রেম-প্রশান্ত বুকে।


  হেথায় খদিজা একা –


কাঁদে বিরহিণী, উদাসীন তার স্বামীর নাহিকো দেখা!


পলাতকা ওরে বাঁধিবে কেমনে, কোথায় তেমন ফাঁসি,


কার কথা ভাবি চমকিয়া ওঠে হেরে ভালোবাসাবাসি!


বক্ষে তাহারে পুরিয়া রাখিলে নিশাসে উড়িয়া যায়,


নয়নে রাখিলে আঁখি-বারি হয়ে গলে পড়ে সে যে, হায়!


বাহুতে বাঁধিলে ঘুম-ঘোরে সে যে ছিঁড়ে বন্ধন-ডোর,


বক্ষের মণি-হার করে রাখে, চুরি করে নেয় চোর!


  


কেন এ বিবাগি, কার অনুরাগী সকল সুখেরে দলে


রৌদ্র-তপ্ত কঙ্করভরা মরুপথে যায় চলে।


আপনার মনে সে কাহার সনে নিশিদিন কথা কয়,


বসিলে ধেয়ানে চাহিতে পারে না, রবি সে জ্যোতির্ময়!


আদর করিয়া পাগল বলিলে শিশুর মতো সে হাসে,


একী রহস্য, এত অবহেলা, তবু যেন ভালোবাসে।


  


  একদা ইহারই মাঝে –


প্রেমিকে তাঁহার লাগালেন খোদা তাঁর প্রিয়তম কাজে।


আদি উপাসনা-মন্দির কাবা – যাহারে ইব্রাহিম


নির্মল কোন প্রভাতে পূজিতে খোদারে মহামহিম, –


সেই কাবাঘরে ছিল না প্রাচীর, ভেঙেছিল তারে কাল,


চারিদিক ঘিরি জমেছিল তার মূর্তি ও জঞ্জাল।


বর্ষার জল ঢুকি সেই ঘরে করিত পঙ্কময়,


পবিত্র কাবা রক্ষিতে যত কোরেশ সহৃদয়


চারিদিকে তার রচিল প্রাচীর, তাও কিছুকাল পরে


বর্ষার স্রোতে ভেসে গেল। ওঠে আল্লার ঘর ভরে


ধূলি-জঞ্জালে. মিলিয়া তখন ভক্ত কোরেশ সবে


ভাবিতে লাগিল কী উপায়ে এর রক্ষা সাধন হবে।


পূজা মন্দিরে রবে নাকো ছাদ, এই বিশ্বাসে তারা


ছাদহীন করে রেখেছিল কাবা, ঝরিবে আশিস-ধারা


ঊর্ধ্ব হইতে। ভূত প্রেত যত দেবতারা নামি রাতে


লইবে সে পূজা, ফিরে যাবে যদি বাধা পায় তারা ছাতে!


লঙ্ঘি কাবার ভগ্নপ্রাচীর এরই মাঝে এক চোর


মূর্তি-পূজারি ভক্তের মনে হানিল ব্যথা কঠোর।


মূর্তির গায়ে ছিল অমূল্য যা কিছু অলংকার


মণি-মাণিক্য, – হরিল সকল! অভাবিত অনাচার!


কাবার সুমুখে ছিল এক কূপ, ভক্ত পূজারি দল


পূজা-সামগ্রী দেব-উদ্দেশে সেই কূপে অবিরল


ফেলিতে লাগিল, সেই সব বলি, ফুল পাতা ক্রমে পচে


কাবা-মন্দিরে বিকট-গন্ধ নরক তুলিলা রচে।


হেরিল একদা ভক্ত সে এক – সে কূপ-গাত্র বেয়ে


উঠিয়া আসিছে অজগর এক সর্পিল বেগে ধেয়ে।


ক্রমে নাগরাজ কূপ-গুহা ছাড়ি কাবায় পাতিল হানা,


ভক্ত পূজারি ভয়ে সেথা হতে উঠাইল আস্তানা।


পূজা দিতে আর কেহ নাহি আসে, ভীষণ সর্প-ভীতি,


কত শত করে মানত তাহারা ভূত উদ্দেশে নিতি।


একদিন এক ঈগল পক্ষী সহসা সে অজগরে


ছোঁ মারিয়া লয়ে গেল তারে দূর পর্বত কন্দরে।


আবার চলিল নব-উদ্যমে মূর্তিপূজার ঘটা।


ভক্তদলের মনে এল এই বিশ্বাস আলো-ছটা;


কাবা-মন্দির সংস্কারের মানত করেছে বলে


অজগরে লয়ে গেলেন ঠাকুর ঈগল পাখির ছলে!


  


সকল গোত্র-সর্দার আসি মিলিল সে এক ঠাঁই,


যা দিয়া গড়িবে কায়েম করিয়া কাবারে, হেজাজে নাই


তেমন কিছুই। শুনিল তাহারা একদিন লোকমুখে –


গ্রিক-বাণিজ্য-পোত এক গেছে ভাঙিয়া ‘জেদ্দা’-বুকে;


ঝটিকা-তাড়িত ভগ্ন সে তরি আছে বিক্রয় লাগি।


সর্দার সব এ খবর পেয়ে উঠিল আবার জাগি।


আনিল অলিদঅলিদ : ইসলাম-বিরোধী কোরেশ-নেতা, খালেদের পিতা। ভগ্ন পোতের তক্তা সকল কিনে,


কাবা মন্দির গড়িয়া তুলিল সবে মিলে কিছুদিনে।


  


নির্মিত যবে হল মন্দির সকলের সাধনায়,


একতা তাদের টুটাইয়া দিল কোন এক অজানায়।


আছিল ‘হাজর আস্‌ওয়াদ্’হাজর আস্‌ওয়াদ্ : কাবা শরিফের প্রাচীরের কালো পাথর। হজযাত্রীগণ পবিত্রজ্ঞানে চুম্বন করে। নামে প্রস্তর কাবার দ্বারে,


কাবার বোধন-দিনে হজরত ইব্রাহিম সে তারে


রাখিয়াছিলেন চিহ্ন-স্বরূপ সেকালের প্রথামতো,


সেই হতে সেই প্রস্তর সবে চুমিত শ্রদ্ধানত।


কেহ কেহ বলে, আদিম মানব ‘আদম’ স্বর্গ হতে


আনিয়াছিলেন ওই প্রস্তর ধূলির ধরণি-পথে।


সেই পবিত্র প্রস্তর তুলি যে-গোত্র কাবা-দ্বারে


রক্ষিবে – সারা হেজাজ শ্রেষ্ঠ গোত্র বলিবে তারে।


এই ধারণায় সকল গোত্রে বাধিল কলহ ঘোর,


প্রতি গোষ্ঠী সে বলে, ‘ও-পাথরে একা অধিকার মোর।’


সে কলহ ক্রমে হইতে লাগিল ভীম হতে ভীমতর ;


আবার ভীষণ যুদ্ধ সূচনা, কাঁপে দেশ থরথর!


রক্ত-পূর্ণ পাত্রে হস্ত ডুবাইয়া তারা সবে


করিল মরণ-প্রতিজ্ঞা তারা – মাতিবে ভীম আহবে!


দামামা নাকাড়া ডিমি ডিমি বাজে, হাঁকিল নকিব তূরী,


পক্ষ মেলিয়া ‘মালিকূল মউত’মালিকূল মউত : মৃত্যুর দূত। আঁটিল কটিতে ছুরি।


  


ছিল হেজাজের প্রবীণতম সে জইফজইফ : বলহীন। ‘আবু উমাইয়া’,


যুযুৎসু সব গোত্রে অনেক কহিলেন সমঝাইয়া –


‘যে শুভব্রতের করিলে সাধনা, অশুভ কলহ-রণে


নাশিয়ো না তারে সিদ্ধিলাভের মহান শুভক্ষণে।


শুভ্রশ্মশ্রু এই বৃদ্ধের শোনো উপদেশ-বাণী,


সংবরো এই আত্মবিনাশী হীন রণ হানাহানি।


কাবা-মন্দিরে সর্বপ্রথম প্রবেশিবে আজ যেই


এই কলহের শুভ মীমাংসা করুক একাকী সেই!’


শ্রদ্ধাস্পদ বৃদ্ধের এই কল্যাণ-বাণী শুনি,


বিরত হইল কলহে তাহারা, বলে, ‘মারহাবা’মারহাবা : ধন্য, শাবাশ। গুণী!


অপলক চোখে নিরুদ্ধ শ্বাসে চাহিয়া রহিল সবে,


না জানি সে কোন অজানিত জন পশিবে কাবায় কবে –


  


সহসা আসিল তরুণ মোহাম্মদ কাবা-মন্দিরে


সর্বপ্রথম উপাসনা লাগি পশে আনমনে ধীরে।


সকল গোষ্ঠী সর্দার ওঠে আনন্দে চিৎকারি –


‘সম্মত এরে মানিতে সালিশ – আমিন এ ব্রতচারী!’


হেজাল-দুলাল সত্যব্রতী বিশ্বাসী আহমদ


ছিল সকলের নয়নের মণি গৌরব-সম্পদ।


শুনিয়া সকল, কহিল তরুণ সাধক, ‘আমার বিধি


মান যদি সব বীর সর্দার – স্ব-গোত্র প্রতিনিধি


করো নির্বাচন, তারপরে সব প্রতিনিধি মিলে


পবিত্র এই প্রস্তর নিয়ে চলো কাবা-মঞ্জিলে।


আমার উত্তরীয় দিয়া এরে বাঁধিয়া তাহার পর


এক সাথে এরে রাখিব কাবায়।’ কহে সব ‘সুন্দর!


সুন্দর এই মীমাংসা তব, আমিন, হেজাজে ধন্য!


তুমি রাখো এই পাথর একাই, ছুঁইবে না কেহ অন্য!’


রাখিলেন হজরত পবিত্র প্রস্তর কাবা-ঘরে,


থামিল ভীষণ অনাগত রণ খোদার আশিস-বরে।


  


ধন্য ধন্য পড়ে গেল রব হেজাজের সবখানে,


এসেছে সাদিক আমিন মোহাম্মদ আরবস্তানে।


  


জব্বুর তওরাত ইঞ্জিল যাহার আসার বাণী


ঘোষিল যুগ-যুগান্ত পূর্বে, বেহেশ্‌ত হইতে টানি


আনিল পীড়িতা মূক ধরণির তপস্যা আজি তারে,


ব্যথিত হৃদয়ে ফেলিয়া চরণ, অবতার এল দ্বারে!


সকল কালের সকল গ্রন্থ, কেতাব, যোগী ও ধ্যানী,


মুনি, ঋষি, আউলিয়া, আম্বিয়া, দরবেশ মহাজ্ঞানী


প্রচারিল যার আসার খবর – আজি মন্থন-শেষ


বেদনা-সিন্ধু ভেদিয়া আসিল সেই নবি অমৃতেশ!


হেরিল প্রাচীনা ধরণি আবার উদয় অভ্যুদয়


সব-শেষ ত্রাণকর্তা আসিল, ভয় নাই, গাহো জয়।


যে সিদ্দিক ও আমিনে খুঁজেছে বাইবেল আর ইশা


তওরাত দিল বারে বারে সেই মোহাম্মদের দিশা,


পাপিয়া-কন্ঠ দাউদ গাহিল যার অনাগত গীতি,


যে ‘মহামর্দে’ অথর্ব-বেদ-গান খুঁজিয়াছে নিতি,


সে অতিথি এল, কতকাল ওরে – আজি কতকাল পরে


ধেয়ানের মণি নয়নে আসিল! বিশ্ব উঠিল ভরে,–


আলোকে, পুলকে, ফুলে ফলে, রূপে রসে, বর্ণ ও গন্ধে,


গ্রহতারা-লোক পতিতা ধরায় আজি পূজা করে, বন্দে!

No comments:
Write comments

Interested for our works and services?
Get more of our update !