Search This Blog

Theme images by MichaelJay. Powered by Blogger.

Blog Archive

Monday, November 28, 2016

চির-বিদ্রোহী

চির-বিদ্রোহী


হার মেনেছ বিদ্রোহীকে বাঁধতে তুমি পারবে না!


   তোমার সর্বশক্তি আমায়,


   বাঁধতে গিয়ে হার মেনে যায়!


হায়! হাসি পায়, হেরেও তুমি হারবে না?


হেরে গেলে! বিদ্রোহীকে বাঁধতে তুমি পারবে না।


  


অশান্ত এ ধূমকেতুকে ঘুম পাড়াবে কোন মায়া?


   তোমার সর্বমায়ার কাঁদন,


   মা-র মমতা প্রেমের বাঁধন


স্পর্শ করে বিদগ্ধ হয়, রুদ্রস্বরূপ মোর কায়া।


অশান্ত এ ধূমকেতুকে ঘুম পাড়াবে কোন মায়া?


  


ধরতে আমায় জাল পেতেছে জটিল তোমার সাত আকাশ!


   সে জাল ছিঁড়ে এ ধূমকেতু


   বিনাশ করে বাঁধার সেতু,


সপ্ত স্বর্গ পাতাল ঘিরে ভস্ম করে সকল বিঘ্ন সর্বনাশ।


   এই ধূমকেতু ছিঁড়ে সে জাল


   এই মহাকাল! রুদ্র দামাল


শূন্যে নাচে প্রলয়-নাচন সংহারিয়া সর্বনাশ।


  


শান্তি দিয়ে অশান্তকে ধরার ধুলায় আনতে চাও,


   দুর্গে এনে দুরন্তকে –


   অশ্রু চাহ রুক্ষ চোখে!


আমার আগুন নিভবে নাকো যতই গলায় মালা দাও!


শান্তি দিয়ে অশান্তকে ধরার ধুলায় আনতে চাও!


  


সংহার মোর ধর্ম, আমি বিপ্লব ও ঝঞ্ঝা ঝড়,


   স্বধর্মে নিধন ভালো –


   কেন আন প্রেমের আলো?


সতী-দেহত্যাগের পর শংকর কি বাঁধে ঘর?


  


আনন্দ আর অমৃত রস কার আগুনে যায় জ্বলে?


   শান্তি সমাহিতের মাঝে


   কেন রুদ্র বিষাণ বাজে?


কোন যাতনায় শিশু কাঁদে, শান্তি পায় না মা-র কোলে?


  


লক্ষ্মীছাড়ার হাতে তুমি ঐশ্বর্য চাও দিতে?


   লোভী ভোগীলক্ষ্মী লয়ে


   রাক্ষস আর দৈত্য হয়ে


কী নির্যাতন করছে তোমার সৃষ্টিতে।


লক্ষ্মীছাড়ার হাতে তুমি ঐশ্বর্য চাও দিতে?


  


করব আমি ধ্বংস সর্ব বিদ্বেষ ও দ্বন্দ্বকে।


   মিথ্যা হল কোরান ও বেদ


   এই অসাম্য অশান্তি ভেদ


প্রলয় কি বাঁধতে পারে বলয়-পরা নর্তকী!


   এখানে সিংহ থাকে!


   অসিংহ সব মহাত্মাকে


দাও গিয়ে ওই হরিনামের হরতকি!


   রুদ্রকে কে শূদ্র করে


   ক্ষুদ্র ধরায় রাখবে ধরে।


অহম শিকল কে পরাবে সোহম স্বয়ম্ভূকে!


  


হে মৌনী, উত্তর দাও সামনে এসে রূপ ধরে,


   পূজা করে ক্ষমা করে


   তোমায় মানুষ জনম ভরে,


কী দিয়েছ তাদের বলো, থেকো নাকো চুপ করে!


  


কেন দুর্বলেরে করে প্রবল নির্যাতন?


   এই সুন্দর বসুন্ধরা


   রাক্ষস আর দৈত্যভরা


কেমন করে করব তোমায় অভেদ বলে সম্ভাষণ।


  


লজ্জা তোমার হয় না যখন তোমায় বলে কৃপাময়!


   পুত্র মরে, মা তবু হায়!


   প্রেমভরে ডাকে তোমায়;


ওগো কৃপণ! বিশ্বে তোমার দাতা বলে পরিচয়!


  


কেন পাপ ও অপরাধের কথা তোমার শাস্ত্র কয়!


   কে দিল মানবজন্ম,


   কে দিল ধর্মাধর্ম,


মুক্ত তুমি, মানুষ কেন এ বন্ধন-জ্বালা সয়?


  


তুমি বল, ‘আমার একা তোমার উপর অধিকার।’


   সেই অধিকার তোমার পরে


   বলো কেন দাও না মোরে?


তোমার মতো পূর্ণ হব, এই ছিল মোর অহংকার!


  


মনের জ্বালা স্নিগ্ধ নাহি করে তোমার চন্দ্রালোক!


   এত কুসুম এত বাতাস


   কেন তবু এ হাহুতাশ,


কোন শোকে অশান্তিতে দেবতা হয় চণ্ডাশোক !


  


কেন সৃষ্টি করলে নরক, জন্মায়নি যখন মানব


   কেন তাদের ভয় দেখাও?


   ভয় দেখিয়ে ভক্তি চাও?


তোমার পরম ভক্তেরা তাই হয় শয়তান, হয় দানব!


  


বিদ্রোহী করেছে মোরে আমার গভীর অভিমান।


   তোমার ধরার দুঃখ কেন


   আমায় নিত্য কাঁদায় হেন?


বিশৃঙ্খল সৃষ্টি তোমার, তাই তো কাঁদে আমার প্রাণ!


  


বিদ্রোহী করেছে মোরে আমার গভীর অভিমান!


   আমার কাছে শান্তি চায়


   লুটিয়ে পড়ে আমার গায় –


শান্ত হব, আগে তারা সর্বদুঃখ-মুক্ত হোক!

No comments:
Write comments

Interested for our works and services?
Get more of our update !